লাক্স সুন্দরী মেহজাবিন চৌধুরী এবং উঠতি মিউজিক
ভিডিও মডেল ও অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। গেল দু’দিন ধরে একে অপরের
চরিত্র-যোগ্যতা নিয়ে ফেসবুকে চুলোচুলি ভালই জমিয়ে তুলেছেন। দু’জনেই বেশ
মারমুখো মন্তব্য করছেন যার যার স্ট্যাটাস আপডেটে। টানাহেঁচড়া করছেন একে
অপরের চরিত্র নিয়ে। অন্যদিকে দু’জনার এমন ফেসবুক চুলোচুলিতে মিডিয়া তারকারা
চুপি চুপি মুচকি হাসলেও ফেসবুককেন্দ্রিক ভক্ত-বন্ধুরা ভালই মজা নিচ্ছেন
এসব স্ট্যাটাস কমেন্টে। অনেকেই এ দু’জনের পাল্টাপাল্টি জবাবে বলছেন,
‘এরাতো দেখি ডিজিটাল হাসিনা-খালেদা।’ অনেকেই বলছেন, ‘দুজনেই কেঁচো খুঁড়তে
গিয়ে নিজেদের সাপ বের করে দিচ্ছেন।’ আবার কেউ কেউ বলছেন, ‘মিডিয়ার নারীদের
এসব চারিত্রিক খবর তো আমরা এমনিতেই জানি। শুধু শুধু এসব নোংরা ঘেঁটে
নিজেদের দুর্গন্ধ নতুন করে ছড়ানোর কি আছে?’ এবার মূল ঘটনায় আসা যাক। কয়েক
দিন ধরেই এই দুই মডেল অভিনেত্রীর মধ্যে শীতলযুদ্ধ চলছে নানাভাবে। চরিত্র
নিয়ে দু’জনার ফেসবুক চুলোচুলি শুরু হয় শবনম ফারিয়ার শেয়ার করা একটি ফেসবুক
ফটো ক্যাপশনকে ঘিরে। সেখানে অভিনেতা জাহিদ হাসানকে দিয়ে মেহজাবিনকে ‘ট্রল’
করা হয়েছে। ফারিয়া গত ১৭ই নভেম্বর ছবিটি ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার দিয়ে সাথে
নিজের মতামত হিসাবে যা লিখেছেন তা হলো এমন, ‘ভাল্লাগসে... ভাল্লাগসে...
ভাল্লাগসে..., ঠিক মানুষের জন্য ঠিক বক্তব্য।’ ক্যাপশনযুক্ত ওই ছবিটিতে
দেখা যায়, জাহিদ হাসান মেহজাবিনকে জিজ্ঞাসা করছেন, ‘আচ্ছা বিয়ের সময়
মাইয়ারা এতো কান্দে ক্যা?’ যার জবাবে মেহজাবিনের ছবিতে ক্যাপশন বসানো হয়,
‘কাঁদবো না? এতোগুলা পোলার সাথে প্রেম করার পর একটা মাত্র জামাই, এইটা কি
সহ্য হয়?’ এদিকে ফারিয়ার শেয়ার করা এবং কমেন্ট করা এই ক্যাপশন ছবিটি দেখে
তেলে বেগুনে ক্ষেপে ওঠেন মেহজাবিন চৌধুরী। তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে
মঙ্গলবার দুপুরে একটি স্ট্যাটাস দেন, যা অনুবাদ করলে হয়- ‘আমাকে নিয়ে
অনেকেই অনেক কথা বলে... ভাল খারাপ গুজব ইত্যাদি। কিন্তু সমপ্রতি এক ভদ্র
মহিলা আমাকে নিয়ে অনেক কমেন্টস দিচ্ছে যেটা আমার ফ্যানরা আমাকে ফরোয়ার্ড
করেছেন। অনেক ধরনের স্ক্রিনশট পাওয়ার পর জানতে পারলাম উনি একজন আপকামিং
মডেল। ঠিক আছে... আমাকে নিয়ে অনেক ট্রলও বানানো হয়। অনেকগুলো ভাল বেশিরভাগ
খারাপ...। আমার প্রশ্ন একটাই, এইখানে উনি জাহিদ হাসান ভাইয়াকে নাকি আমাকে
ঠিক চরিত্র বলেছেন আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। কিন্তু একজন আপকামিং মডেল
যদি তার চেয়ে সিনিয়র শিল্পীদের একটা বাজে ট্রলকে এভাবে শেয়ার করেন, তাহলে
আমি উনার ব্যাকগ্রাউন্ড, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কাজের প্রতি অনুগত থাকার
মানে কি ধরে নিবো?’ এদিকে শবনম ফারিয়ার ফেসবুক প্রোফাইলে এ সম্পর্কে কোন
তথ্য পাওয়া না গেলেও ‘শবনম ফারিয়া’ নামের একটি ফ্যান পেইজে পাওয়া যায়
মেহজাবিনের এমন স্ট্যাটাটেসর পাল্টা জবাব। সেখানে শবনম ফারিয়া নিজ জবানিতে
মেহজাবিনের উদ্দেশ্যে লিখেছেন- ‘হা হা হা... থ্যাংকস ফর মেকিং মি ফেমাস!
ওয়েট, আরেকটু হেসে নিই ... হা হা হা...। প্রবাদ আছে না- ঠাকুর ঘরে কে রে,
আমি কলা খাই না! আমি কাউকে হার্ট করার জন্য কিছু পোস্ট করি নাই, পুরোটাই
ফান ছিল! কিন্তু যেহেতু কথা উঠেছেই তাই না পারতে কিছু বলা! প্রথমত আমি
আপকামিং মডেল না। শখের বশে কাজ করা, না আমার স্টার হওয়ার ইচ্ছাও নেই,
কোয়ালিটিও নেই! আমার কোন প্রাক্তন প্রেমিক আমাকে শুটিংয়ে এসে থাপ্পড় মেরে
যায় না, শুটিংয়ের সময় রাতে আমার রুম থেকে উহঃ আহঃ আওয়াজ বের হয় না। আমি
একসাথে এক ডিরেক্টর, দুই মডেল, এক ডিজে, এক ব্যারিস্টারের সাথেও প্রেম করি
না! এতো কোয়ালিটি নাই আমার! সবচেয়ে বড় কথা আমাকে কেউ বলে না আমি লা...
স্টার হইসি! দ্বিতীয়ত দুই মাস পর আমি গ্রাজুয়েট হচ্ছি, আর একটা আন্ডার
মেট্রিক (ও লেভেল) মেয়ে যখন আমার পড়াশোনা নিয়ে প্রশ্ন তোলে খুব ভাল্লাগে।
তৃতীয়ত আরেকজন কি বলে সেইটা নিয়ে মাথা না ঘামায় নিজের স্বভাব চরিত্র
শোধরানোর দিকে নজর দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ! আমি মা... আরেকজন আমাকে মা... বলে
ট্রল শেয়ার দিসে তার পারিবারিক শিক্ষা ও কাজের প্রতি ভালবাসা নিয়ে প্রশ্ন
তোলা তোমার মতো বুদ্ধিহীন জীবের কাছে অপ্রত্যাশিত কিছু না! চালিয়ে
যাও...’। এদিকে ফারিয়ার এমন ভয়ংকর প্রতি উত্তরের বিপরীতে গতকাল সকালে নিজ
স্ট্যাটাসে মেহজাবিন লিখেন, হ্যালো শবনম ফারিয়া, যতদূর মনে পড়ে আমি আপনাকে
মিডিয়া পাড়ায় দেখেছি। এখন আমারও একটু হাসতে ইচ্ছা করছে। মন খুলে হাসতে
ইচ্ছা করছে। যদি বাংলা সিনেমার ভিলেনদের হাসিটা নকল করতে পারতাম তাহলে সেই
হাসিটা হেসে এখানে এটাছ করতাম। এনি ওয়ে ‘আঙ্গুর ফল টক’ এটা যে কখন হয় সেটা
সবাই জানে। আরে তোমার কথা শুনে তোমাকে বড্ড বাচ্চা মেয়ে মনে হচ্ছে। লেট মি
পয়েন্ট আউট সামথিং। ১. আমি এটলিস্ট কোন চান্স পাওয়ার জন্য ডিরেক্টরের সাথে
লিঁয়াজো করতে গিয়ে ডিরেক্টরের বউয়ের হাতে জুতাপেটা খাই নাই। ২. ডোন্ট বি
জেলাস বেবি। ৩. আপনার কল্পনায় যা কিছু ছিল তা বললেই সত্য হয়ে যাবে না। আপনি
নাটক লিখলে ভাল চলবে। স্পেশালি হিন্দি সিরিয়াল। ৪. আপনি দেখি ভালই উহঃ আহঃ
বিশেষজ্ঞ! বেশ প্র্যাকটিস আছে বলে মনে হচ্ছে। ৫. ডোন্ট অ’রি। যদি আমার মতো
ফেমাস হতে চান- ওয়ার্ক হার্ড। ওইসব ফালতু কাজ করতে হয়নি। যোগ্যতা না থাকলে
তখন অনেক কিছুতেই সমস্যা মনে হয়। ৬. কামঅন বেবি। ইউ আর বিহেবিং সো
চাইল্ডিস। এদিকে মানবজমিনের পক্ষ থেকে দু’জনের সঙ্গেই এই বিব্রতকর
ধারাবাহিক বিষয়টি নিয়ে আলাপ করার চেষ্টা হয়। সে ক্ষেত্রে শবনম ফারিয়াকে
মুঠোফোনে না পাওয়া গেলেও মেহজাবিন তার আত্মপক্ষ সমর্থনে মানবজমিনকে বলেন,
দেখুন আমি শবনম ফারিয়া নামের কাউকে চিনতাম না। অথচ কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছি
নানাভাবে সে আমার অনেক তথ্য নেয়ার চেষ্টা করছে। একই সাথে নানাভাবে আমাকে
উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পরে তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখি
সে মিউজিক ভিডিওর মডেল। কিন্তু আমার পেছনে তার লাগার কারণ কোনভাবেই আমি
মেলাতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই আপসেট। দরকার হলে এ নিয়ে আমি
আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো। উল্লেখ্য, একই মিডিয়ায় কাজ করে এভাবে ফেসবুকে একজন
আরেকজনের চরিত্র নিয়ে সরাসরি চুলোচুলির ঘটনা সম্ভবত এটাই প্রথম। যে ঘটনাটি
এখন টক অব দ্য মিডিয়ায় পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, শবনম ফারিয়া নিজেকে
আলোচনায় আনার জন্যই এমনটা করছেন। আবার কেউ বলছেন মেহজাবিনের চরিত্র হননের
প্রয়াসে ফরিয়াকে দিয়ে এই ঘটনাটি ঘটাচ্ছেন আরেক জনপ্রিয় মডেল শখ!
সূত্র: দৈনিক মানবজমিন, ২৮ নভেম্বর ২০১৩
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন